২১০ দিন বন্দী থাকার পরে দেশে

Date: 2025-08-12
news-banner

অনলাইন ডেক্স 

জমিজমা বিক্রি করে ২০২২ সালে স্বপ্নের দেশ যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। দালালের হাত ধরে প্রথমে যান তুরস্ক, সেখান থেকে গ্রিস, ইতালির পরে লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশ হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান সিলেটের বাসিন্দা আলমগীর চৌধুরী। সকাল বাঁধা পেরোতে সময় লেগেছে প্রায় ৩ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পা দিলেও দীর্ঘ সাত মাস যুক্তরাষ্ট্রের একটি বন্দিশিবিরে থাকার পরে দেশে ফেরত পাঠানো হয় তাকে। অন্ধকারেই থাকে স্বপ্নের দেশ দেখা। অবৈধভাবে থাকার অভিযোগে গত ২ আগস্ট আলমগীর চৌধুরীসহ ৩৯ জন বাংলাদেশীকে ফেরত পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। যাদের প্রায় প্রত্যেকে বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকেন এবং স্বেচ্ছায় সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

আলমগীর চৌধুরী জানান, ‘আমার  আত্মীয় ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। তার সকলেই সহযোগিতা করেছেন। কিন্তু আদালত আমাদের থাকার অনুমতি দেননি। আমি দেশটিতে আশ্রয় চেয়েছিলাম, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। আমাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়। আমার অপূরনীয় ক্ষতি হলো। যুক্তরাষ্ট্রে সীমান্তে প্রবেশের পর দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ অবৈধ অভিবাসীদের আটক করে ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে প্রথমেই তাদের ‘ক্রেডিবল ফিয়ার ইন্টারভিউ’ নেওয়া হয়। আবেদনকারীর দাবি যাচাই করা হয় যে, তিনি নিজ দেশে ফিরলে রাজনৈতিক, ধর্মীয়, জাতিগত নিপীড়ন বা প্রাণনাশের ঝুঁকিতে পড়বেন কি না  সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারলে তাকে আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে আদালতে শুনানির সুযোগ দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্ট  অনুযায়ী আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। একজন ইমিগ্রেশন জজ মামলার শুনানি করেন। তবে আবেদনকারী ইচ্ছে করলে নিজের খরচে আইনজীবী নিতে পারেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র কোনো সরকারি আইনজীবী দেয় না। শুনানির পর বিচারক সিদ্ধান্ত নেন আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রে থাকার উপযুক্ত কি না। যদি উপযুক্ত না হন তাহলে তাদের নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রে যেতে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে আমার। আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে টাকা-পয়সা ও আইনজীবীর ব্যবস্থা করেও কোন ফল আসলো না।  শেষ অবদি আমাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। ‘শুরুতে যখন বাংলাদেশ ছাড়ি তখন অনেক জায়গা-জমি বিক্রি করি। স্বপ্ন ছিল যুক্তরাষ্ট্র যাব। ব্রাজিল থেকে মেক্সিকো হয়ে পানামার জঙ্গল পাড় হয়ে যুক্তরাস্ট্র পৌছাতে সময়র লেগেছে প্রায় ৮ মাস। নদী, খাল, জঙ্গল সব কিছু পাড় হয়েছি। কিন্তু এক টাকাও কামাতে পারিনি। এখন দেশে এসে আমি অসহায়। আর অন্য কোনো দেশে যাওয়ার মতো সাধ্য নাই। 

advertisement image

Leave Your Comments